পাবনা সদরের হেমায়েতপুর ইউনিয়নে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় আওয়ামী লীগের এক কর্মীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের নাম শামীম হোসেন (৪০)।
মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সদরের হেমায়েতপুর ইউনিয়নের নাজিরপুর হাটপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, সদরের হেমায়েতপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের পরাজিত বিদ্রোহী প্রার্থী ও জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত বিজয়ী চেয়ারম্যানের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের সময় গুলিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত নৌকা প্রতীকের পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকের মৃত্যু হয়েছে।
নিহত আওয়ামী লীগ কর্মী শামীম হোসেন নাজিরপুর হাটপাড়ার নুর আলী প্রামানিকের ছেলে। বিষয়টি পাবনা সদর সার্কেলের এএসপি রোকনুজ্জামান সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে খবর পেয়ে পাবনা সদর আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্স হাসপাতালে ছুটে যান। এ সময় নিহতের পরিবার ও আত্মীয়দের সান্ত্বনা দেন এবং ঘটনা তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশ প্রশাসনকে অনুরোধ করেন তিনি।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজের পর নাজিরপুর হাটপাড়া বাজারে একটি চায়ের দোকানে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের পরাজিত প্রার্থী মঞ্জুরুল ইসলাম ওরফে মধু তার কর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে বসে চা খাচ্ছিলেন। এ সময় বিদ্রোহী প্রার্থী নিলু খাঁ ও তার ছেলে ইমরান জামায়াত-শিবিরের বেশকিছু লোকজন নিয়ে এসে অতর্কিত এলোপাথারী গুলি ছোড়ে। এ সময় গুলিতে শামীম হোসেন ঘটনাস্থলেই মারা যায়।
নৌকা প্রতীকের পরাজিত প্রার্থী মঞ্জুরুল ইসলাম জানান, “বিদ্রোহী প্রার্থী তারিকুল ইসলাম খান ও তার ছেলে ইমরান হোসেন জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত জাহাঙ্গীর আলম খান ওরফে আলম হাজী সমর্থিত জামাত-শিবিরের সশস্ত্র কর্মীরা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি ছোড়ে। এ সময় আমার সামনে থাকা কর্মী শামীম গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে এলোপাথাড়ি গুলিতে আমিও মাটিতে শুয়ে পড়ি জন্য প্রাণে রক্ষা পাই।
এর আগে ২৬ ডিসেম্বর হেমায়েতপুর ইউনিয়নের নির্বাচন চলাকালে বিদ্রোহী প্রার্থী ও জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীর সমর্থকরা বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে হামলা চালিয়ে বিশৃংখলা সৃষ্টি করে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও ক্ষোভ থেকে যায়। নির্বাচন কেন্দ্রীয় ঘটনাকে কেন্দ্র করেই বিজয়ী চেয়ারম্যানের লোকজন দ্রোহী প্রার্থীকে সঙ্গে নিয়ে এই নাশকতামূলক হামলা চালায়।
এ ঘটনায় বিজয়ী চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম খান ওরফে আলম হাজী ও বিদ্রোহী প্রার্থী তারিকুল ইসলাম নিলুর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তারা দুজনেই ফোন রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে পাবনা সদর সার্কেলের এএসপি রোকনুজ্জামান জানান, স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল ও হাসপাতাল পরিদর্শন করেছে। গুলিবিদ্ধ শামীমকে হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এছাড়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।